প্রিয় বোন! আপনার চরিত্র হলো পাতলা কাঁচের মতো। একেবারে তুলতলে, মোলায়েম। কাঁচে স্পট পড়লে যেমন দূর থেকে দেখা যায়, তেমন আপনার চরিত্রে কোনো দাগ লাগলে বহুদিন পরও দেখা যাবে৷ লোকমুখে শুনা যাবে। সুতরাং আপনাকে চলতে হবে স্বচ্ছ পানির মতো। সেখানে কোনো বাঁধ নির্মাণ করা যাবে না৷ কেননা সন্দেহের জাল সে বাঁধ সহজেই চূর্ণবিচূর্ণ করে দেবে।
নারী এবং পুরুষ। একে অপরের সম্পূরক। সহোদর। সহযোগী। সহকারী। সহযোদ্ধা। সৃষ্টির শুরু থেকেই পরস্পরের সম্পর্ক ঠিক এমনই।
রমণী বা নারী; আল্লাহ তাআলার এক অনন্য নেয়ামত। সৃষ্টির সূচনাকাল থেকেই নারীর উপাধি—প্রশংসিত। অন্তরঙ্গ বন্ধু। কেন এই দাবি? বেহেশতে আদম আলাইহিস সালামের একাকিত্বের অন্তরঙ্গ বন্ধু হাওয়া রাদিআল্লাহু আনহা। সুখ রাজ্যেও এই নারীর শূন্যতা আদম আলাইহিস সালামকে বেশ আবেগি করে তুলেছিলো। তাঁর চোখ-মুখ এমন একজন সঙ্গীকেই কামনা করছিলো। হৃদয় অপেক্ষা করছিলো—কেউ একজন আসুক বলে। আমার কেউ একজন থাকুক। হাওয়া রাদিআল্লাহু আনহার আগমনে বেহেশতকে তাঁর ‘বেহেশত’ বলে মনে হয়েছিলো। তিনি হেসেছিলেন লজ্জায়। নুয়ে ছিলেন কৃতজ্ঞতায়। যে নারী তার স্বামীর মুখে হাসি ফোটায়, সে নারী প্রশংসিত নয় কি? অবশ্যই সে প্রশংসিত।
নারী কেন প্রশংসিত? কোথায় কুড়োবে প্রশংসার ফুল? কীভাবে গাঁথবে প্রশংসার মালা? নিয়ম কী? কুরআন-হাদিসে কোনো নিয়ম আছে কি? বা কোনো মন্ত্র-টন্ত্র? এসব প্রশ্নের উত্তর নিয়েই আমাদের আয়োজন ‘প্রশংসিত রমণী’।
নারীমনে প্রশস্য ফুল ফোটাতে, নারীজীবন শ্লাঘ্য করে তুলতে, নারীজীবনের দুঃখ-কষ্ট সব দূর করতে ‘প্রশংসিত রমণী’ অনবদ্য ভূমিকা পালন করবে—আমাদের বিশ্বাস। বইটি পড়ে একজন নারী নিজেকে চিনবে জানবে বুঝবে এবং সেজদায় পড়ে রবের শোকর আদায় করবে—আমরা এমনটাই প্রত্যাশা করি।
আমাদের দৃঢ় বিশ্বাস—‘প্রশংসিত রমণী’তে একজন নারী নিজেকে পুণ্যময়ী করে গড়ে তুলবার কার্যকরী ও ফলপ্রসূ রসদ খুঁজে পাবেন। প্রশংসিত রমণী হবার সহজ-সরল পথের দিশা পাবেন। নারীজীবনের প্রতিটি পদ ও পরিচয়ে স্বস্তিবোধ করবেন। প্রশংসিত রমণী হবার জন্যে ঢের পাথেয় জোগাড় করতে পারবেন। বাঁচতে পারবেন নিজেকে চিনে। বুঝতে পারবেন একজন নারীর মান-মর্যাদা। শান-শওক, ইনশাআল্লাহ! সুন্দর-গোছানো সুখী সংসার, আদর্শ সমাজ রাষ্ট্র ও পৃথিবী গঠনে ‘প্রশংসিত রমণী’ প্রশংসিত ভূমিকা রাখুক—আমাদের গভীর তামান্না।
গুনাহ যেই করুক, যেখানেই, যেভাবেই করুক, এর মন্দ প্রতিক্রিয়া ও মন্দ পরিণাম ভোগ করতেই হবে। দুনিয়ার অনেক বড় বড় সম্পদশালী এবং প্রভাবশালী লোক গুনাহ করে। তাদের দেখার কেউ নেই। বলার কেউ নেই। বাঁধা দেয়ার কেউ নেই। নিশ্চিন্ত মনে গুনাহ করে। তাদেরও এর পরিণতি ভোগ করতে হয়। এইযে তাদের এত সম্পদ, এত ক্ষমতা, কিন্তু মানসিক শান্তি নেই। পেরেশানি আর অস্থিরতার শেষ নেই তাদের। সবকিছু থাকা সত্ত্বেও মনমতো সব খেতে পারে না। ঠিকমতো ঘুমাতে পারে না। চেতনানাশক ওষুধ খেয়ে ঘুমাতে হয়। এই অশান্তিগুলো কেন আসে? নিশ্চিত এগুলো আল্লাহর আজাব। আল্লাহর রহমত তো হতে পারে না।
গুনাহের প্রতিক্রিয়া ব্যক্তি, সমাজ ও জায়গায় পড়বেই। এটাকে প্রতিরোধ করা যায় না। হজরত থানভী রহ. এ সম্পর্কে ছোট্ট একটি পুস্তিকা রচনা করেন কর্মফল নামে। সেখান থেকে আমরা গুনাহের কিছু ক্ষতি তুলে ধরছি।
কুরআনে কারিম প্রতিবেশীদের সাথে উত্তম আচরণের জন্য বারবার তাকিত করা হয়েছে এবং নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম অনেক উপদেশের মধ্যেও প্রতিবেশীর হকসমূহের ব্যাপারে বিস্তারিত বর্ণনা করেছেন। এমনকি এক স্থানে নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এরশাদ করেন-
ما زال جبريل يوصيني بالجار حتى ظننت أنه سيورثه
“আমার কাছে হযরত জিব্রাইল আমিন আসেন এবং আমাকে প্রতিবেশীর হকসমূহের ব্যাপারে এত তাগিদ করতে থাকেন যে, আমার ধারণা হতে লাগলো সম্ভবত প্রতিবেশীকে মিরাসের মধ্যে ওয়ারিশ বানিয়ে দিবেন।
Copyright © 2024 । Maktabatul Modinah | Design & Developed by VinnoRokom IT Solution